Diwali Speech in Bengali | বাংলায় দীপাবলি ভাষণ

প্রিয় শিক্ষকমণ্ডলী ও আমার প্রিয় সহপাঠী বন্ধুরা, আজ আমি এখানে একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও আনন্দময় উৎসব, দীপাবলির ওপর কিছু কথা বলার জন্য দাঁড়িয়েছি। দীপাবলি, যাকে আমরা "আলোর উৎসব" হিসেবেও জানি, শুধুমাত্র একটি উৎসব নয়, বরং এটি একটি প্রাচীন ঐতিহ্য, যা অন্ধকারের ওপর আলো, এবং অসত্যের ওপর সত্যের বিজয়কে চিহ্নিত করে। আজকের এই ভাষণে, আমি দীপাবলির গুরুত্ব, এর পেছনের কাহিনী, এবং কিভাবে আমরা এই উৎসবটি উদযাপন করি তা নিয়ে আলোচনা করব।

দীপাবলি: একটি জাতীয় উৎসব (Diwali: A National Festival)

ভারত একটি বৈচিত্র্যপূর্ণ দেশ, যেখানে বিভিন্ন ধর্ম এবং সংস্কৃতির মানুষ একসঙ্গে বাস করে। এই বৈচিত্র্যের কারণে ভারতের বিভিন্ন অংশে নানা ধরনের উৎসব পালিত হয়, যার মধ্যে দীপাবলি একটি অন্যতম প্রধান উৎসব। এটি মূলত হিন্দু ধর্মের অনুসারীদের প্রধান উৎসব হলেও, জৈন, শিখ এবং বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরাও এই উৎসবকে তাদের নিজস্ব প্রথা অনুযায়ী উদযাপন করে। দীপাবলি আমাদের জীবনে আলোর গুরুত্ব এবং শুভবুদ্ধির উদযাপন নিয়ে আসে।

দীপাবলির পেছনের কাহিনী (The Story Behind Diwali)

দীপাবলির উৎস নিয়ে বিভিন্ন কিংবদন্তি আছে, কিন্তু সবচেয়ে জনপ্রিয় গল্পটি রামায়ণের। এই কাহিনী অনুযায়ী, রাবণকে পরাজিত করে প্রভু রাম ১৪ বছরের বনবাস শেষে তাঁর স্ত্রী সীতা এবং ভাই লক্ষ্মণের সঙ্গে অযোধ্যায় ফিরে আসেন। তাঁদের আগমনের আনন্দে অযোধ্যার মানুষজন ঘরে ঘরে প্রদীপ জ্বালিয়ে তাঁদের স্বাগত জানায়, আর সেই থেকেই দীপাবলি উৎসবের শুরু।

এছাড়াও মহাভারতের কাহিনী অনুযায়ী, পাণ্ডবরা ১২ বছরের বনবাস এবং ১ বছরের অজ্ঞাতবাস শেষে তাঁদের রাজ্যে ফিরে আসেন, আর সেই আনন্দেই দীপাবলি পালিত হয়। জৈন ধর্মে এই দিনটিতে ভগবান মহাবীরের নির্বাণ লাভের দিন হিসেবেও উদযাপন করা হয়। শিখ ধর্মাবলম্বীরা গুরু হরগোবিন্দ জির কারাগার থেকে মুক্তি লাভের দিনটিকে স্মরণ করে দীপাবলি উদযাপন করেন। এইভাবে দীপাবলি ভারতের প্রতিটি ধর্ম ও সংস্কৃতিতে ভিন্ন ভিন্ন তাৎপর্য বহন করে।

দীপাবলি উদযাপন (How Diwali is Celebrated)

দীপাবলি উদযাপন সাধারণত পাঁচ দিনব্যাপী চলে। ধনতেরাস দিয়ে এই উৎসব শুরু হয় এবং দীপাবলির দিনটি প্রধান উৎসব হিসেবে পালিত হয়। দীপাবলির দিন ঘরবাড়ি পরিষ্কার করা হয়, নতুন জামাকাপড় কেনা হয়, এবং বিশেষ করে ঘর সাজানো হয় প্রদীপ ও রঙ্গোলি দিয়ে। সন্ধ্যায় লক্ষ্মী এবং গণেশের পূজা করা হয়, কারণ লক্ষ্মী দেবী সম্পদের দেবী এবং গণেশ দেবতা শুভ সূচনার প্রতীক। পূজার পর লোকেরা আতশবাজি ফাটিয়ে উৎসবের আনন্দ উপভোগ করে।

দীপাবলির শিক্ষা (The Moral of Diwali)

দীপাবলি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে আমরা যেন অন্ধকারের পথ ছেড়ে আলোর পথে চলি। এই উৎসবটি আমাদের শেখায় যে শুভবুদ্ধি, সততা, এবং ন্যায়ের পথে চলা উচিত। দীপাবলির আলো আমাদের জীবনে খারাপ অভ্যাস পরিত্যাগ করে ভালো কাজ করার অনুপ্রেরণা দেয়। এছাড়া, এই উৎসব আমাদের একত্রিত করে, পরিবারের সদস্য এবং বন্ধুদের মধ্যে বন্ধন মজবুত করে।

ছোট ভাষণ: দীপাবলির সংক্ষিপ্ত পরিচিতি (Short Speech on Diwali)

প্রিয় বন্ধুরা, আজ আমি দীপাবলির ওপর একটি ছোট বক্তব্য রাখছি। দীপাবলি, যাকে আমরা "দীপাবলি" বা "আলোর উৎসব" হিসেবেও জানি, এটি ভারতীয় সংস্কৃতির একটি অন্যতম প্রধান উৎসব। হিন্দু পুরাণ অনুসারে, রাবণকে পরাজিত করে প্রভু রাম তাঁর স্ত্রী সীতা এবং ভাই লক্ষ্মণের সঙ্গে অযোধ্যায় ফিরে আসেন, আর এই আনন্দে অযোধ্যার মানুষ প্রদীপ জ্বালিয়ে তাঁদের স্বাগত জানায়। এই দিনটিতে লক্ষ্মী দেবীর পূজা করা হয়, কারণ তিনি সম্পদের দেবী এবং ঘরে ঘরে আলোর ঝলকানিতে এই দিনটি উদযাপন করা হয়।

উপসংহার (Diwali Speech in Bengali)

শেষে বলতে চাই, দীপাবলি কেবল একটি উৎসব নয়, এটি আমাদের জীবনে আলোর প্রয়োজনীয়তা এবং সঠিক পথে চলার গুরুত্বকে প্রতিফলিত করে। আসুন আমরা সকলে একসঙ্গে এই উৎসবটি উদযাপন করি এবং অন্ধকার থেকে আলোর পথে এগিয়ে চলি। দীপাবলির এই শুভক্ষণে, সকলের জীবনে সুখ, সমৃদ্ধি, এবং শান্তি আসুক।

উৎসবের আলোর শুভেচ্ছা সকলকে!

Please validate the captcha.

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন